বিশ্বজুড়ে বাড়ছে অর্গানিক চাষাবাদ !!
কৃষিবিদ এম এ মনসুর লিয়নঃ অর্গানিক চাষাবাদ হচ্ছে কোন প্রকার কীটনাশক, রাসায়নিক সার, এন্টিবায়োটিক, হরমোন এমনকি জেনেটিক মডিফাইড জাত ছাড়াই সম্পুর্ন প্রাকৃতিকভাবে চাষাবাদ করা। অর্গানিক চাষাবাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রকৃতি থেকে উৎপাদিত বালাইনাশক এবং জৈব সার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে সারা বিশ্বে ফসল উৎপাদনে ব্যপকভাবে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার হয়ে থাকে। কীটনাশক এবং রাসায়নিক সারের রেসিডিওয়াল ইফেক্ট শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। আমরা অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য না বুঝেই মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করছি যার কারনে লিভার, কিডনি, হার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং মানুষ মাত্রাতিরিক্তভাবে ডায়াবেটিকস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই উন্নত বিশ্বে এখন ব্যপকভাবে অর্গানিক ফসলের চাহিধা বাড়ছে। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নতির সাথে সাথে এক শ্রেনীর মানুষের কাছেও অর্গানিক ফসলের চাহিধা দিন দিন বেড়ে চলেছে। অর্গানিক ফসল উৎপাদনের খরচ সাধারনভাবে উৎপাদিত ফসলের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে থাকে তাই অর্গানিক ফসলের দাম বেশি।
- লিচটেসস্টান-৪১%
- অস্ট্রিয়া-২৬.১%
- সাওটম-২৪.৯%
- এস্তোনিয়া-২২.৩%
- সুইডেন-২০.৪%
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশ্বে ৩.১ মিলিয়ন অর্গানিক কৃষক রয়েছে যা আগের বছরের তুলনায় ১৩% বেশি। বিশ্বে অর্গানিক উৎপাদকের প্রায় ৫১% এশিয়াতে, ২৭% আফ্রিকাতে এবং ইউরোপে ১৪% ইউরোপে বাস করে যার মধ্যে ভারতে ১.৩৬ মিলিয়ন, উগান্ডায় .২১ এবং ইথিওপিয়ায় .২০ মিলিয়ন রয়েছে।
অর্গানিক পন্যের চাহিধা বিশ্বব্যপী দিন দিন বাড়ছে। ২০১৯ সালে অর্গানিক খাদ্য ও পানীয়ের বিশ্বব্যপী খুচরা বিক্রয় ১০৬ বিলিয়ন ইউরোতে পৌছেছে যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪.৭ বিলিয়ন ইউরো, জার্মানী ১১.৯ বিলিয়ন ইউরো, ফ্রান্স ১১.৩ বিলিয়ন ইউরো বিক্রি হয়েছে।
COVID-19 মহামারি দ্বারা অর্গানিক মার্কেট ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০ সালে কিছু দেশে অর্গানিক পন্যের বিক্রি বেড়েছে ৩০% পর্যন্ত। মহামারিটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার পাশাপাশি অর্গানিক খাদ্য শিল্পের উপর ব্যপকভাবে প্রভাব ফেলেছে। এটি দেখে মনে হচ্ছে অর্গানিক খাবার ঔষধের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
আমাদের দেশে আগামীতে অর্গানিক পন্যের চাহিধা ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। প্রাথমিকভাবে যারা অর্গানিক পন্য উৎপাদনের সাথে যুক্ত হবেন তারা অধিক লাভবান হবেন। তাই সচেতন এবং আধুনিক কৃষকরা এখনি অর্গানিক ফসল উৎপাদন শুরু করে অধিক লাভবান হতে পারেন। অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বায়োপেষ্টিসাইড ব্যবসার আরো একটি সেক্টর বাংলাদেশে বৃদ্ধি লাভ করবে।
ধন্যবাদ
কোন মন্তব্য নেই